আরএসএফের ড্রোন হামলায় সুদানে ৪৩ শিশুসহ ৭৯ জন নিহত হয়েছে


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ৭:৪২ অপরাহ্ণ /
আরএসএফের ড্রোন হামলায় সুদানে ৪৩ শিশুসহ ৭৯ জন নিহত হয়েছে

সুদানের দক্ষিণ কর্ডোফানে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর অতর্কিতে ড্রোন হামলায় মৃত্যু ৪৩ শিশুসহ প্রায় ৭৯ জনের। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন। এক বিবৃতিতে, দক্ষিণ কর্ডোফান রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে বৃহস্পতিবার পশ্চিম সুদানের কালোগি শহরকে লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় নিহতদের মধ্যে চারজন মহিলাও রয়েছেন।

শুক্রবার সুদানের কর্তৃপক্ষ হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ড্রোনটি শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন, একটি হাসপাতাল এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। আরএসএফ-মিত্র সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ (এসপিএলএম-এন) এর আক্রমণকে “জঘন্য অপরাধ” বলে নিন্দা জানয়েছে।

মৃতের সংখ্যা ৭৯ জনে পৌঁছানোর আগে, রাজ্য সরকার প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল যে এই হামলায় ছয় শিশু এবং একজন শিক্ষক সহ আটজন নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকার। তারা দাবি করেছে যে এই জঘন্য হামলার জন্য আরএসএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

ইউনিসেফ ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। এক বিবৃতিতে, ইউনিসেফ বলেছে, এই হামলায় ৫ থেকে ৭ বছর বয়সী ১০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। সুদানের ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, “শিশুদের কখনই সংঘাতের মূল্য দেওয়া উচিত নয়। ইউনিসেফ সকল পক্ষকে অবিলম্বে এই আক্রমণ বন্ধ করার এবং নিদারুণ প্রয়োজনে মানবিক সহায়তার জন্য নিরাপদ, অবাধ প্রবেশাধিকার প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। শিশুদের হত্যা ও পঙ্গু করা, এবং স্কুল ও হাসপাতালে আক্রমণ শিশু অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।”

ইউনিসেফ আরও বলেছে, “নভেম্বরের শুরু থেকে কর্ডোফান রাজ্য জুড়ে নিরাপত্তার তীব্র অবনতির মধ্যে এই আক্রমণটি ঘটেছে, যার ফলে ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে এবং মানবিক চাহিদা আরও গভীর হয়েছে।” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কর্ডোফানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কারণে ৪১,০০০ এরও বেশি মানুষ পালিয়ে গিয়েছেন।

রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কর্দোফানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কারণে ৪১,০০০ এরও বেশি মানুষ পালিয়ে গিয়েছেন। তবে এই হামলার বিষয়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ-এই তিনটি কর্দোফান রাজ্যে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র লড়াই চলছে। যার কারণে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

সুদানের ১৮টি রাজ্যের মধ্যে, আরএসএফ পশ্চিমে দারফুর অঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যই নিয়ন্ত্রণ করে নিয়েছে। উত্তর দারফুরের কিছু উত্তর অংশ বাদে সবটাই এখনও সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনী দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব এবং কেন্দ্রে অবস্থিত বাকি ১৩টি রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা দখল করেছে, যার মধ্যে রাজধানী খার্তুমও রয়েছে।