‘আল্লাহর রহমত ও দয়া’


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ৮:০৫ অপরাহ্ণ /
‘আল্লাহর রহমত ও দয়া’

সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য যিনি সর্বদা ও পূর্ণতার গুণে গুণান্বিত এবং ইবাদতের যোগ্য একমাত্র সত্য মাবুদ। হে আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর পরিবার এবং সাহাবিদের ওপর কেয়ামত পর্যপ্ত সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন।

হে মুমিন ভাই ও বোনেরা, আসুন! নেক আমল করে ও হারাম কাজ পরিত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহকে ভয় করি। তাহলেই পরম দয়ালু আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি ও জান্নাতের স্থায়ী নেয়ামত লাভ করা যাবে। আমরা আরও জেনে নিই; আল্লাহর সুবিশাল রহমত ও তাঁর অগণিত নেয়ামতের কথা যা তিনি ছাড়া অন্য কেউ গণনা করতে পারবে না। তাই রবের শুকরিয়া আদায় করা অপরিহার্য।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘স্মরণ করো, তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেছেন তোমরা কৃতজ্ঞ হইলে তোমাদিগকে অবশ্যই অধিক দেব আর অকৃতজ্ঞ হইলে আমার শাস্তি হবে কঠোর (ইবরাহিম-৭)।’ তিনি আরও বলেছেন, তোমরা জেনে রাখো আমার পক্ষ হতে সর্বশ্রেষ্ঠ সুসংবাদ তা হচ্ছে, সৃষ্টি জীবের সঙ্গে রব্বুল আলামিনের সম্পর্ক রহমতের। তিনি রহমতের মাধ্যমে পুণ্যবাদ ও পাপী, মুমিন ও কাফের সবাইকে দুনিয়ার জীবনে অনুগ্রহ করেন।’

আল্লাহ বলেন, বলুন হে আমাদের রব আপনি দয়া ও জ্ঞান দ্বারা সবকিছু পরিব্যাপ্ত করে রেখেছেন (আল মোমেন-৭)। এ ছাড়াও তিনি বলেন : ‘আর তোমার রব ক্ষমাশীল অতীব দয়ালু তাঁর রহমত ও দয়া সবকিছু জুড়ে আছে সুতরাং আমি উহা তাহাদের জন্য নির্ধারিত করব যাহারা তাকওয়া অবলম্বন করে জাকাত দেওয়াসহ আমার নির্দেশ পালন করে (আরাফ-১৫৬)।’ আল্লাহতায়ালা মুমিনদের জন্য বিশেষভাবে এই রহমত আখেরাতে দেবেন। তাদের নেক আমল হারাম কাজ পরিত্যাগের জন্য। আল্লাহ কারও প্রতি বিন্দুমাত্র জুলুম করেন না। নিশ্চয়ই কল্যাণ রয়েছে সালাফ তথা সৎকর্মশীল পূর্বসূরিদের অনুসরণে আর অকল্যাণ রয়েছে পরবর্তীদের বিদাতি কার্যক্রমের মধ্যে। আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ১০০ ভাগ রহমত নির্ধারণ করেছেন যার থেকে একটি ভাগ জিন মানুষ, পশু-পাখি ও কীটপতঙ্গের মধ্যে ভাগ করেছেন এর মাধ্যমে বন্যপ্রাণীরাও তাদের সন্তানের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে।

মহান আল্লাহ ১০০ ভাগের ৯৯ ভাগ নিজের জন্য রেখে দিয়েছেন। যার দ্বারা কেয়ামতের দিন বান্দাদের প্রতি দয়া করবেন (সহিহ বুখারি) দয়া ও অনুগ্রহের মাধ্যমে জীবন হয় আনন্দময় সমাজ হয় শুদ্ধ যেমন : দুর্বল-ফকির-অভাবী ও নির্যাতিত মানুষ শক্তিশালী-ধনী ও ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম ব্যক্তিদের দয়া ও অনুগ্রহে সিক্ত হয়ে বাস করে। যখন দয়া ও অনুগ্রহ হারিয়ে যায় তখন মানুষ জীবনের আনন্দ ও খুশি হারিয়ে ফেলে। জীবন কাঠিন্যের নির্মম কশাঘাতে জর্জরিত হয় এবং বিপদ মুসিবত নেমে আসে। অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত মানুষের জীবনে অনিষ্টের ছায়া নেমে আসে।’

সুতরাং আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের মহিমাম্বিত রব, রহমান, দয়ালু অনুগ্রহপরায়ণ দয়ার গুণেই তিনি বিশেষায়িত। তিনি কোরআনুল কারিমকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন (বনি ইসরায়েল-৮২)। তাই তিনি প্রত্যেক সুরার শুরুতেই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি মানবজাতিকে জানিয়েছেন যে, তাঁর সব বিধান দয়া এবং অনুগ্রহপূর্ণ রহমত ও কল্যাণপূর্ণ। সৎকর্ম দ্বারা উচ্চমর্যাদা অর্জনের অবাধ সুযোগ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বান্দাদের প্রতি এহসান যা তাদের অনিষ্ট ও ধ্বংস থেকে রক্ষা করে যা তিনি কোরআনুল কারিমে বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনার মাধ্যমে মানুষকে শিক্ষা ও উপদেশ দিয়েছেন।

তিনি রসুলদের নেতা এবং আমাদের নবী মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সা.)-কে তাই মানবজাতির কাছে রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন (আম্বিয়া-১০৭)। তিনি মুমিনদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রহমত। আল্লাহ মানবজাতির ওপর অকাট্য প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করে জানিয়েছেন, তাঁর দয়া ও অনুগ্রহের পথ সুপ্রশস্ত এবং সুস্পষ্ট। যিনি প্রকৃতপক্ষে এসবের মাধ্যমে আমল করতে চান তার জন্য পথ সুগম সুরা আরাফের-১৫৬ আয়াতে যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।

আল্লাহ সুবহানুতায়ালা কোরআনুল কারিমের বরকতসমূহ অর্জনে আমাদের অংশগ্রহণকারী করুন এবং নবী (সা.) সুন্নাহ অনুসরণ দ্বারা উপকৃত করুন। আমিন।