ইহুদি বাহিনীর নৃশংসতা-বর্বরতা ও ধ্বংসকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল সারা বাংলাদেশ


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৮, ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ /
ইহুদি বাহিনীর নৃশংসতা-বর্বরতা ও ধ্বংসকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল সারা বাংলাদেশ

                                            ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ :: নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে বিশ্বজুড়ে চলা আন্দোলনের ঢেউ লেগেছে বাংলাদেশেও। গতকাল সোমবার ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে কোনো পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ক্লাস হয়নি। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ বন্ধ রাখা হয়। সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ বিক্ষোভ ও সমাবেশে উত্তাল হয়ে ওঠে। আপামর জনসাধারণ রাস্তায় নামলেও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল চোখ ধাঁধানো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যেমন প্রতিবাদমুখর ছিল, তেমনই রাস্তায় সরব ছিলেন নর্থ-সাউথ, ব্র্যাক, এআইইউবি, ইস্ট ওয়েস্ট, প্রেসিডেন্সিসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও। রাজপথে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন মেডিকেল, মাদরাসা, স্কুল, কলেজপড়ুয়ারাও। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাব, উত্তরা, আফতাবনগর, গুলশান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, সাইন্সল্যাবসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থান এবং সারাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ করেছেন নারী-পূরুষ, বৃদ্ধ-তরুণ, শিশু-কিশোরসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনও ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

ঢাবিতে দিনভর বিক্ষোভ: ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় দিনব্যাপী বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ। গতকাল সকাল থেকেই রাজু ভাস্কর্যের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাথে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এসময় তারা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘সাবিলুনা সাবিলুনা, আল-জিহাদ আল-জিহাদ’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, ইসরাইল নো মোর’, ‘আমরা সবাই রাসূল সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা’, ‘ইসরাইলি পণ্য বয়কট করো’, ‘ইসরাইল নয়, গাজা চাই’—এমন নানা স্লোগানে গর্জে ওঠে। ‘ওয়ার্ল্ড স্টপ ফর গাজা’ কর্মসূচির সমর্থনে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এর আগে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সালমান খান বলেন, আজাদী মানবজাতির মৌলিক আকাক্সক্ষা। ইনশাআল্লাহ, একদিন ফিলিস্তিনও স্বাধীনতা লাভ করবে। শহীদদের পাশাপাশি ইতিহাস মনে রাখবে তাদেরও, যারা এই সংকটময় সময়ে নিশ্চুপ ছিলো। আরেক আন্দোলনকারী ওমর ফারুক বলেন, গত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর যে বর্বর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, তা মানবসভ্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এবারের গণহত্যা যেন কফিনের শেষ পেরেক। এখনই সময় মুসলিম বিশ্বকে একযোগে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, সারাবিশ্ব আজ দেখছে তারা (ইসরাইল) একটি অভিশপ্ত জাতি। যারা নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও অতিক্রম করেছে। সময় এসেছে আজ পুরো মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার। গুড়িয়ে দিতে হবে সমস্ত বিষ দাঁত। সেই দিন আর বেশি দূরে না, যেদিন আল্লাহর সব বাণী আমাদের সামনে দৃশ্যমান হবে।

বিকেলে গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন: সলিডারিটি ফ্রম বাংলাদেশ’ ব্যানারে একটি পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর বা স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

অন্যদিকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস পরীক্ষা থেকে বিরত থাকে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকে। এছাড়া ২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুয়েটে মানববন্ধন : গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে গতকাল ২ ঘণ্টা শিক্ষা কার্যক্রম ও দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এছাড়া প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

গতকাল সোমবার বুয়েটের তথ্য ও প্রকাশনা শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. শফিউর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গাজায় ক্রমবর্ধমান ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের আহŸানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. আবু রোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, একটি সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে বোমাবর্ষণ, অনাহারে রাখা ও নিশ্চিহ্ন করার সময় আমরা নীরব থাকতে পারি না। এর প্রতিবাদ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

মানববন্ধনে বুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বেশ কয়েকজন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘ফ্রম দা রিভার টু দা সি প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইস্ট টু ওয়েস্ট নো ফ্লো টু জায়োনিস্ট’, ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরাইল নিপাত যাক’; ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, গাজায় নিরীহ শিশু, নারী এবং সাধারণ মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হচ্ছে, তা শুধু একটি রাজনৈতিক সংকট নয়, এটি একটি চরম মানবিক ও নৈতিক সংকট। এমনকি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, মানবিক করিডোরে হামলা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো ধ্বংসের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাÐ সভ্যতার চরম অবক্ষয়। আমরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান অমানবিক সহিংসতা, নির্বিচারে হত্যা, বোমাবর্ষণ, রাসায়নিক হামলা, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা বলেন, আমরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, সংগঠিত হতে এবং কার্যকর অবস্থান নিতে সর্বদা নৈতিকভাবে একতাবদ্ধ। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোই যথেষ্ট নয়, এখন সময় এসেছে রাস্তায় দাঁড়াবার, কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে মানবতার পক্ষে আওয়াজ তোলার। ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’- এর অংশ হিসেবে আমরা আজ বিশ্বের অন্যান্য সচেতন মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।

যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এই সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানাই ইসরাইলের পরিচালিত গণহত্যার এবং সেই সঙ্গে নিন্দা জানাই তথাকথিত মানবতার ঝান্ডাধারী যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পরাশক্তিদের যারা এই হত্যাযজ্ঞে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আমরা গভীর হতাশা প্রকাশ করছি অর্থনৈতিক এবং সামরিকভাবে শক্তিশালী আরব বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি, যারা এই নিষ্ঠুরতার সময়ে নীরবতা পালন করেছে। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা নিপীড়নকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করেছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের অভাব বিশ্বমানবতার জন্য হতাশাব্যঞ্জক।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা আশা করছি, ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক মহল অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হবে এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের প্রতি অব্যাহত সহমর্মিতা এবং সব প্রকার সহযোগিতা চালু রাখা হোক।

মানববন্ধনে বুয়েটের প্রো-ভিসি ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ফিলিস্তিনের দখলদার ইসরাইলি বাহিনী পৌনে শতাব্দী ধরে দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে, গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আরব বিশ্ব ও অন্যান্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো নীরব রয়েছে। আমি মনে করি, অতি শিগগিরই ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিনের উত্থান ঘটবে এবং এই উত্থানই সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের ঐতিহাসিক পরাজয়ের সূচনা করবে। এ সময় তিনি গেøাবাল স্ট্রাইক ফর গাজার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন।

ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। খণ্ড খণ্ড মিছিলে জানান দেয় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি। ফিলিস্তিনের পতাকায় ছেঁয়ে যায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বায়তুল মোকাররমের সামনে মুসল্লিদের বিক্ষোভ: গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন মুসল্লিরা। এসময় তারা ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখর করে তোলেন মসজিদের উত্তর এলাকা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার দুপুর থেকেই বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন তারা। এতে ইসরাইলবিরোধী বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করেন সর্বস্তরের মানুষ। বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহবান জানান তারা।

বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ‘মজলুম গাজাবাসীর ডাকা বিশ্বব্যাপী হরতালে‘র সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। বাদ জোহর মুসল্লিরা স্লোগান দিয়ে ওঠেন ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’। পরে মসজিদ থেকে বেরিয়ে সবাই সমবেত হন মসজিদের উত্তর পাদদেশে। এখানে সবাই একসঙ্গে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। আর স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন মসজিদ প্রাঙ্গণ। এ সময় তারা স্লোগান দেন ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও ভেঙে দাও’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’। নামাজে অংশ নিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি মুসল্লি বায়তুল মোকাররমে আসেন। আগত মুসল্লিদের অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।

মানিক মিয়া এভিনিউতে সমাবেশ : ইসরাইলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় ওই এলাকার চারদিকে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ফটোকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মিছিল নিয়ে সমবেত হন হাজারো মানুষ। তরুণ-তরুণী, শিক্ষার্থী ও নানা পেশাজীবী মানুষ একে একে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে সংসদ ভবনের সামনে সমবেত হন। ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ শেষে বিকাল ৫টার দিকে একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করে মানিক এভিনিউ সড়কে প্রদক্ষিণ করে। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে মুসলমান নয়, হতে হবে মানুষ, আমার ভাই মরলো কেনও জবাব চাই, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, বীর বাঙালি জেগেছে, ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, ফিলিস্তিনি মুক্ত করো, এমন নানান স্লোগানে মুখর হয়েছিল পুরো প্রাঙ্গণ।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা একজন প্রকৌশলী সামছুজ্জামান বাবুল বলেন, আজকে আমরা এসেছি এটি আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। আমাদের এখানে থেকে দাবি তুলতে চাই। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী তিনি একজন ক‚টনৈতিক কৌশলী। বাংলাদেশের ১৮ কোটির প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের একটাই দাবি, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে আমাদের রাষ্ট্র প্রধানকে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে রক্তকরণ হচ্ছে, সবার ঘর থেকে বের হতে হবে। যার যার জায়গা থেকে এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, পৃথিবীর সব ধরণের নিপীড়িত মানুষের কান্না এক। আমরা নেতানিয়াহুর রক্তপিপাসু বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। বাংলাদের তরুণদের মতো সারা বিশ্বে ফিলিস্তিনের পক্ষে একই শব্দ উচ্চারণ হোক।

বাড্ডা-আফতাবনগরে মানববন্ধন ও সমাবেশ : গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে রাজধানীর বাড্ডা-আফতাবনগর এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে বিভিন্ন কলেজ-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সোমবার আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা ‘আমার ভাই শহীদ কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’, ‘ইসরাইলের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ইসরাইলের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘বিশ্বের মুসলিম, এক হও এক হও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি রামপুরা, ওয়াপদা ও বাড্ডা সড়ক ঘুরে পুনরায় ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসরাইল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। আজকে তারা ফিলিস্তিনের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। পাঁচ থেকে দশ বছর পরে তারা বড় মুসলিম দেশগুলোকেও আক্রমণ করবে। অবিলম্বে নেতানিয়াহু প্রশাসনের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিক্ষোভ ও সমাবেশে অংশ নেন আফতাবনগর, বাড্ডা, রামপুরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, ত্রিমোহনী, নন্দীপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

একই সময়ে মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানেও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাকিব হাসান বলেন, ‘আমরা যুদ্ধবিরতি চাই না। ফিলিস্তিনি ভাইদের ওপর আর একটি বুলেট ও বোমা যেন আক্রমণ করতে না পারে, আমরা সেই নিশ্চয়তা চাই। ফিলিস্তিনের রক্তের ওপর ব্যবসা হচ্ছে। আমরা এটা বন্ধ চাই। মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহবান, কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

একই সময়ে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় বিক্ষোভ করেন বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে অংশ নেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ), ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি), আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।

আইইউবির শিক্ষার্থী আজমাইন নাফিস বলেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আমরা আজকে এখানে একত্রিত হয়েছি। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে নারী-শিশুসহ সেখানকার মানুষদের হত্যা করছে। আমরা তা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি ইসরায়েলের সব পণ্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি।

ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কাছে বিক্ষোভ: ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কাছাকাছি কয়েকটি স্থানে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এর মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের উল্টো দিকের সড়কের ফুটপাথে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সটির একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন। তাঁরা গাজায় ইসরায়েলের নারকীয় হামলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’, ’ ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমরা কারা, তোমরা কারা ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ বলে স্লোগান দেন। এর আগে গুলশানে মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করেন একদল তরুণ। মার্কিন দূতাবাসের সামনে সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, ঢাকার শিক্ষার্থীরা মার্কিন দূতাবাসের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।

উত্তরায় ছাত্র-জনতা, আলেম-ওলামাদের বিক্ষোভ : ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর উত্তরায় ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামাগণ বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, বিএনএস সেন্টার, জসিমউদদীন, বিমানবন্দর গোলচক্কর, রাজলক্ষি, উত্তরা পূর্বথানা, আজমপুর প্রকম্পিত করে তুলেন। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। এছাড়াও কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সারখ্যাত দেশটি।

বিক্ষোভে উত্তরা ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি,বি আরএসি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স অফ টেকনোলজি, বিজিএমই ইউনিভারসিটি ফ্যাশন অফ টেকনোলজিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় নির্বিকারচিত্তে শুধু দেখেই যাচ্ছে, কারণ ফিলিস্তিনিরা মুসলমান। মুসলমানের মানবাধিকার ‘নাই’ করে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিহাসের ভুল পথে হাঁটছে, যা তাদের জন্য আত্মঘাতী।
তারা সারা বিশ্বের মুসলমানসহ আমেরিকার জনগণকে ও গাজায় নিরিহ নারী পুরুষ হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসার আহবান জানান। কারণ তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরাইলকে অবিরত সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের দাসত্ব গ্রহণ করা আমেরিকার ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী।

মার্কিন শাসকগোষ্ঠীকে এই রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি থেকে বের করে আনার রাজনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে বলে তারা স্মরণ করে দিয়ে বলেন, আমেরিকার জনগণ তাদের শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারলে পৃথিবীতে মানবতার কোনো মূল্যই আর থাকবে না।

জাহাঙ্গীরনগর-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ : ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধের দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা। অ্যাপ্রন পরে চিকিৎসকদের এ মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জন ও মুসলিম বিশ্বকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান। তারা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি’; ‘প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ : রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বেলা ১১টার দিকে ‘বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে এ কর্মসূচি করা হয়। এ বিক্ষোভে ঢাকা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘স্টপ কিলিং ইন গাজা’সহ নানা ¯েøাগান দেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর : গাজায় সন্ত্রাসী ইসরাইল কর্তৃক গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী আহুত হরতালের সমর্থনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পল্টন জোনের সংহতি সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধ বৈশ্বিক লড়াই ফরজ হয়ে পড়েছে। গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি।

আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর বছরের পর বছর বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ক্যান্সার। এর মূলোৎপাটন করে ফেলতে হব। গতকাল সোমবার বিশ্বব্যাপী আহুত হরতালের সমর্থনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পল্টন জোনের সংহতি সমাবেশ জোন সভাপতি দিলু রোড মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি সালাউদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজীর পরিচালনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান অতিথি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব,যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম।

ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল : বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীদের আহুত হরতালের সমর্থনে ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে স্মরণকালের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল পূর্ব জমায়েত সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, বিশিষ্ট দাঈ মুফতী আবু ত্বহা আদনান, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, ইসমাঈল হোসেন সিরাজী, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবী, মুফতী আব্দুল আজিজ কাসেমী, মুফতী এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ।

পরে মিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে সমাপ্ত হয়। বাদ জোহর মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বিক্ষুব্ধ জনতা বেলা ১১টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জমায়েত হতে থাকে। সকলের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, কালেমার পতাকা, আল আকসার ছবি শোভা পাচ্ছিল। ইসরাইলের নেতানিয়াহু ও ড্রোনাল ট্রাম্পের ছবির উপর জনতার রুদ্ররোষ সৃষ্টি হলে ছবিতে জুতাপেটা ও আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম এক বিবৃতিতে বলেন, পৃথিবীর বুকে জুলুম করে কেউ টিকে থাকতে পারেনি। এটাই ইতিহাস বলে। ফেরাউন, নমরূদ জুলুম করে ধ্বংস হয়েছে। ইসরাইলের জুলুমের কারণে ধ্বংস অনিবার্য। ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে গণহত্যা বিচার এই পৃথিবীর বুকে হবে। আমেরিকার ছত্রছায়ায় জুলুমবাজ সন্ত্রাসী ইসরাইল নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ ওআইসি ও আরব বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এদের নীরবতার কারণে ইসরাইলের গণহত্যা নির্বিকারে চালিয়ে যেতে পারছে। তিনি বিশ্ব মুসলমানদেরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে ইসরাইল ও আমেরিকার পণ্য বয়কটের আহবান জানান।

ইসলামী ঐক্য জোট : বিশ্বব্যাপী গাজাবাসীর ডাকা হরতালের প্রতি অবিচল সংহতি ও দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকীব ও ঐক্য জোটের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল করীম এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত গণহত্যা চালিয়ে সন্ত্রাসী ইসরাইল গাজায় পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। জায়নবাদী ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনি মুসলমানদের চিরতরে নিশ্চিন্ন করার মিশনে নেমেছে। সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার প্রত্যক্ষ মদদে ইসরাইল গাজাবাসীদের নির্বিচারে হত্যা করলেও জাতিসংঘ নীরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করছে। নেতৃদ্বয় বলেন, গাজাবাসীসহ ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় অবিলম্বে জাতিসংঘকে জরুরি সাধারণ সভা ডেকে ফিলিস্তিনে আন্তর্জাতিক শান্তি বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ : গাজায় একতরফা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও উপর্যপুরি বিমান হামলার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে বর্বরোচিত হামলা বন্ধের দাবিতে জামায়াতে ইসলামী দেশব্যাপি বিক্ষোভ কর্মমূচি পালন করেছে। কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকাল ৪টায় জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তর রাজধানীর মহাখালী চৌরাস্তায় এক বিক্ষোভপূর্ব বিশাল সমাবেশ করে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচারে হত্যা ও নিধনযজ্ঞ আইয়ামে জাহিলিয়াতের নির্মমতা ও বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। অবিলম্বে গাজায় হামলা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অন্যথায় মুসলিম তরুণ-তরুণীরা ইসরায়েল অভিমুখে মার্চ কর্মসূচি দেবে। বিশাল বিক্ষোভ মিছিলটি মহাখালী ওভারব্রিজ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মগবাজারের হাতিরঝিল মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত পথ সভার মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও ইয়াছিন আরাফাত, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জিয়াউল হাসান।

এনসিপির বিক্ষোভ : ফিলিস্তিনের বাসিন্দাদের ওপর চলা ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ভারতের পার্লামেন্টে ওয়াকফ সংশোধনী বিল প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল বিকলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে দলটি। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা অবিলম্বে ফিলিস্তিনে চলা এই নারকীয় হত্যাকাÐ বন্ধের আহবান জানান। তারা বলেন, ২০২৫ সালের এই আধুনিক বিশ্বে এমন হত্যাকাণ্ড চলছে আমরা আশ্চর্যজনকভাবে তা মেনে নিচ্ছি। গাজার মানুষ মরবে আর পুরো বিশ্ব আরামে থাকবে তা হতে পারে না। এই হত্যার প্রতিবাদে স্বয়ং আমেরিকাতে বিক্ষোভ চলছে তবুও তারা সামান্য বিচলিত হচ্ছে না। নেতারা বলেন, বোমা হামলা-বিমান হামলার পরিমাণ তারা মাসের পর মাস বাড়াচ্ছে। আরও নৃশংস হয়ে উঠছে। আমাদের মধ্যে মানবিকতা-মনুষ্যত্ব সেটা কি শুধু মুখেই থাকবে। শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর গণহত্যা বন্ধের আহবান জানান তারা। বিক্ষোভে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ টঙ্গী পশ্চিম জোন : ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে টঙ্গী বাজার বড় মসজিদ চত্ত¡র হতে সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা টুপিওয়ালা মুসল্লী, মাদরাসার ছাত্র, প্যান্ট শার্ট পরা ইস্কুল, কলেজ- ভার্সিটির ছাত্র, মিছিলের মধ্যভাগে প্রচুর সাধারণ জনতার অংশগ্রহণ করেন। কারো হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা,কারো আবার কালেমা খচিত পতাকা, বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছে হাতে হাতে।মিছিল ছুটে চলছে টঙ্গী স্টেশন রোডের দিকে পাগাড়,মরকুন,শিলমুন,মুদাফা,পূর্ব আরিচপুর ,দক্ষিণ আরিচপুর সহ টঙ্গীর সকল এলকা হতে মিছিল এসে জড়ো হয়েছে স্টেশন রোডের তৃমোহনায়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ টঙ্গী পুর্ব থানা কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা কেরামত আলী,মাওলানা জাকারিয়া আরশাদী, মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মল্লিক, মুফতি সিদ্দিকুর রহমান, মুফতি হাফিজ উল্লাহ কাসেমী, মুফতী ইয়াকুব,মাওলানা আকরাম হুসাইন, মাওলানা শাব্বির, মুফতি মাহমুদুল হাসান ফরিদী,মুফতি আরিফ।

সউদী নদওয়াতুল উলামা আল আলামিয়া : সউদী নদওয়াতুল উলামা আল আলামিয়ার চেয়ারম্যান মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী বিশ্বব্যাপী গাজাবাসীদের প্রতি অবিচল সংহতি ও দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসরাইল নামক অবৈধ ও দখলদার রাষ্ট্রটি গাজায় যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম গণহত্যাগুলোর অন্যতম। নিরস্ত্র নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে পবিত্র এই ভ‚মি। এই বর্বরতা মানবতা, সভ্যতা ও নৈতিকতার মুখে এক প্রচণ্ড চপেটাঘাত। ইসরাইল একটি রাষ্ট্রের নাম নয়, বরং তা মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত এক কুখ্যাত সন্ত্রাসী শক্তির নাম। তিনি স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসরাইল অবিলম্বে তার হত্যাযজ্ঞ, দখলদারিত্ব ও গণবিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ করুক, নতুবা মুসলিম উম্মাহর ধৈর্যর সীমানা চ‚র্ণবিচ‚র্ণ হয়ে যাবে। আমাদের সবর অনন্ত নয়। আল্লাহর ঘর, মাজলুম ভাই-বোনদের রক্ষায় আমরা জীবনপণ লড়াইয়ে প্রস্তুত।

খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমিরে শরীয়ত আল্লামা আবু জাফার কাসেম ও মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল বর্বর হামলার নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন পৃথিবীতে ইহুদিদের কোন রাষ্ট্র ছিল না তারা ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভেঙে জায়গা জমি দখল করে ইসরাইলি নামক ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করেছে। ফিলিস্তিন মুসলমানদের উপর হামলার কারণে ভবিষ্যতের ইসরাইল নামক এই ইহুদি রাষ্ট্র থাকবে না। পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরাইলি নামক রাষ্ট্রের নাম মুছে দিতে হবে।

মিরপুর ইমাম উলামায়ে কেরাম : বৃহত্তর মিরপুর ইমাম-উলামাদের উদ্যোগে গতকাল ১নং মিরপুর গোলচত্বরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশে মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়ার সভাপতিত্বে এবং মাওলানা গাজী ইয়াকুবের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা লোকমান মাযহারী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন ঢাকাুবী মাওলানা আখতারুজ্জামান কাসেমী, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা ফজলে ইলাহী, মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী, মাওলানা শারফুদ্দিন ইয়াহইয়া কাসেমী। সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনিদের জান-মাল রক্ষায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

কওমি মাদরাসা শিক্ষক সমিতি : ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গতকাল বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে কওমি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সোবহানী। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী, সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার ফরিদুল আকবার, সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান, নেজামে ইসলাম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা হারিসুল হক, সাবাস বাংলাদেশের সভাপতি মো. আব্দুল জলিল ও মুফতি আব্দুল্লাহ মাহমুদ।

ইসলামী ঐক্যজোটের বিক্ষোভ মিছিল : ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বর গণহত্যা ও ভারতে মুসলিম স্বার্থবিরোধী বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ঐক্যজোট। গতকাল সোমবার বাদ যোহর ইসলামী ঐক্যজোট ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে লালবাগ শাহী মসজিদের প্রধান গেইট থেকে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শায়েস্তা খান রোড, লালবাগ চৌরাস্তা মোড়, ঢাকেশ^রী রোড, আজিমপুর এতিমখানা প্রদক্ষিণ করে ফের লালবাগ শাহী মসজিদের সামনে এসে শেষ হয়।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন রাজী। বক্তব্য রাখেন ইসলামী ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মুফতী মীর মোঃ হেদায়েতুল্লাহ গাজী, মুফতী মনজুর মুজিব, মুফতী আনিসুর রহমান, মুফতী নাসির উদ্দিন,। মাস্তুল ফাউন্ডেশন : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের কঠিন পরিস্থিতিতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা মাস্তুল ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য জরুরি ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

মাস্তুল ফাউন্ডেশন ২০২৪ সালের রমজান মাস থেকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের জন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ হয়ে খাদ্য সরবরাহ করে আসছে। তাদের ‘মাস্তুল মেহমানখানা’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৫০ জনের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই এতিম শিশু ও বিধবা। এছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ঔষধপত্র সরবরাহ করছে, যা আহত ও অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।