এমএম কলেজেই যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ /
এমএম কলেজেই যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
  • এমএম কলেজেই যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ২১ ফেব্রুয়ারি বকুলতলার বেদি ঘিরে রাখা হবে

যশোরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে থাকছে সরকারি এমএম কলেজের শহীদ মিনারই। এই বেদিতেই পূষ্পার্ঘ্য অর্পণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। আর ২১ ফেব্রুয়ারি বকুলতলার শহীদ মিনারটি সাদা কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখবে যশোর পৌর প্রশাসন। সেখানে এবার আর কেউ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবে না। এখন থেকে ২১ ফেব্রয়ারি সর্ব সাধারনের কেইউ এই শহীদ মিনার ব্যবহার করতে পারবেননা।

সবাইকেই এমএম কলেজের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের আহবান জানানো হয়েছে। জেলাবাসী এই শহীদ মিনারের বেদিতে অমর একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে সভায় যশোরের পুলিশ প্রশাসন, শিক্ষা বিভাগ, জেলা তথ্য অফিস, পৌর প্রশাসন ও সরকারি এমএম কলেজ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানগণকে কাযকর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে। যশোরে ভাষা শহীদ দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়, মহান ভাষা দিবসের প্রথম প্রহর থেকে যশোরের মানুষ মিলিত হবে এমএম কলেজের শহীদ বেদিতে।

১০ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মহান শহীদ দিবসের প্রস্তুতি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কার্যক্রম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে চালানোর জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রস্তুতি এবং সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখার প্রস্তাব এসেছে। একইসাথে ভাষা দিবসের আলোচনা তথ্যবহুল করতে ১৯৫২ সালের ছাত্র নেতাদের আলোচক করারও প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

২০১৮ সালে সাবেক মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু পৌরসভার অর্থায়নে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে শহরের ফাতেমা হাসপাতাল মোড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পুরানো ভবনের সামনে নির্মাণ করেন একটি নতুন শহীদ মিনার। আর ওই বছর থেকেই এই শহীদ মিনারকে কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে পৌরসভার পক্ষে ঘোষণা দেয়া হয়। যা উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে যশোরের মানুষের কেউ নতুন এই শহীদ মিনার, আবার কেউ এমএম কলেজের শহীদ বেদিতে পূষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে আসছিলেন। নতুন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভিড় থাকতো অনেক বেশি।

তবে ১০ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসন আয়োজিত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের প্রস্তুতি সভায় নেয়া হয়েছে নতুন এই সিদ্ধান্ত। ফাতেমা হাসপাতালে পাশের বকুলতলার শহীদ মিনারটি একটি বিশেষ দলের এবং বিশেষ গোষ্ঠীর আখ্যা দিয়ে সভায় বলা হয়, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি এমএম কলেজের শহীদ মিনারটি কয়েক যুগ ধরে যশোরের মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে জেনে আসছেন। অথচ হঠাৎ মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে একই শহরে আরো একটি শহীদ মিনার তৈরি করে তা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে যশোরের মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। এবার থেকে ওই শহীদ মিনারটি মহান একুশে আর ব্যবহার করতে দেয়া সমীচীন হবে না।

যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ প্রস্তুতি সভায় সরকারি এমএম কলেজের শহীদ মিনারকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে ফের স্বীকৃতি ও ঘোষণা দেয়া হয়। এবার সার্বজনীনভাবে সকলকে এমএম কলেজের শহীদ বেদিতেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য আহবান জানানো হয়েছে। একই সাথে এদিন ফাতেমা হাসপাতালের পাশের শহীদ মিনারটি সাদা কাপড় দিয়ে পৌর প্রশাসন ঘিরে দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় বক্তব্য দেন যশোরের পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরে আলম সিদ্দিকী, যশোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, দৈনিক লোকসমাজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়রুল কবির নান্টু।

সভায় আরো গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, যশোরের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানগণ। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় এবার থেকে মহান ২১ ফেব্রুয়ারি যশোর সরকারি এমএম কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যশোরের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।