গভীর নিম্নচাপটি ভারত উপকূল অতিক্রম, সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত  বুধ-বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা 


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ /
গভীর নিম্নচাপটি ভারত উপকূল অতিক্রম, সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত  বুধ-বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা 

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গতকাল সোমবার ভারতের উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে কেটে যাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার ফলে ভ্যাপসা গরমের মাত্রা কমতে পারে। সেই সাথে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

গতকালও দেশের অধিকাংশ এলাকায় ভ্যাপসা গরম অব্যাহত ছিল। দিনের বেলায় বর্ধিত তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে রাতের ‘সর্বনিম্ন’ তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে। একই সঙ্গে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গা-জ্বলা গরমে-ঘামে সর্বত্র নাকাল অবস্থা।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৪.৭ এবং সর্বনিম্ন ২৮.৪ ডিগ্রি সে.। দেশের অনেক জায়গায় রাতের ‘সর্বনিম্ন’ তাপমাত্রার পারদও ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রির ঘরে। যা মৌসুমের এ সময়ে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ২৩ মিলিমিটার। এ সময়ে দেশের দুয়েক জায়গায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি গতকাল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর কিছুটা উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুপুরের দিকে পুরীর কাছে দিয়ে উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে। এটি বর্তমানে উড়িষ্যা ও পাশর্^বর্তী এলাকার ভূভাগে অবস্থান করছে এবং আরো উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ৩ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ুর একটি বলয় ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চল এবং সেখানকার নদ-নদীসমূহে স্বাভাবিকের তুলনায় উঁচু জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে নিম্নাঞ্চল।