গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৬১ হাজার একদিনেই ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : আগস্ট ৫, ২০২৫, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ /
গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৬১ হাজার একদিনেই ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত

সোমবার গাজার উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর একদিনের অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৩৯ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের পর মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজার ৯৩৩ জনে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা হামাসকে নির্মূল ও জিম্মিদের মুক্ত করতেই এই সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। সোমবার (৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বোমাবর্ষণে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধারের মতো পর্যাপ্ত সরঞ্জাম বা জনবল ফিলিস্তিনিদের হাতে নেই। আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্যও প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসক সংকটে পড়েছে হাসপাতালগুলো। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীকে অভিযুক্ত করে আরও বলা হয়, খাদ্য সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষের ওপরও হামলা চালানো হচ্ছে। সোমবার ত্রাণ নিতে আসা অবস্থায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হন।

যুদ্ধের সূচনার পেছনে রয়েছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের সেই হামলা, যেদিন হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এর পরপরই ইসরায়েল ‘সন্ত্রাস দমন’ এবং ‘জিম্মি উদ্ধার’ অভিযান শুরু করে গাজায়। চলমান এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তা উপেক্ষা করে চলেছে। একমাত্র চাপের মুখে ১৯ জানুয়ারি কিছুদিনের জন্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও, ১৮ মার্চ থেকে ফের হামলা শুরু হয়।

এই দ্বিতীয় দফার অভিযানে গত চার মাসে নিহত হয়েছেন প্রায় ৯,৪৪০ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩৭,৯৮৬ জন ফিলিস্তিনি। এদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু। অন্যদিকে হামাসের হাতে ধরা পড়া ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, সামরিক অভিযান চালিয়েই তাদের উদ্ধার করা হবে।

অপরদিকে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালত ‘আইসিজে’-তে ইতোমধ্যে গণহত্যার মামলা দায়ের হয়েছে। জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা নেতানিয়াহুর সরকারকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানালেও, নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেছেন যে, “হামাস ধ্বংস এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবে।” তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি