কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের হামলায় নিহত শহীদদের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় আওয়ামী দুর্বৃত্ত ও তাদের দোসরদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে বিমানবন্দর মহাসড়কে গণমিছিল করেছে ছাত্র-জনতা।
আজ ৩১শে জানুয়ারি শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ শেষে বিকালে আবদুল্লাহপুর পলওয়েল মার্কেটের সামনে এসে জড়ো হয় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের সাথে যোগ হয় বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের জুমার নামাজ পড়তে আসা স্থানীয় মুসল্লিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চের গ্রাফিতি মুছে ফেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, আওয়ামী লীগের সহযোগী অঙ্গসংগঠনের দুর্বৃত্তরা এর পরেই একের পর এক ময়নারটেক স্কুল, দক্ষিণখান কাওলা, বিএনএস সেন্টার, প্রিয়াংকা সিটি, দিয়াবাড়ী কাঁচকুড়া, আবদুল্লাহপুরসহ উত্তরার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেয়ালে আঁকা জুলাই স্মৃতির গ্রাফিতি মুছে ফেলে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চের সামনে শিক্ষার্থীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে উত্তরার সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন। জানা যায়, গত ২৩শে জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তরা মুগ্ধ মঞ্চে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের ছবি ছিঁড়ে ফেলে, সে সাথে কালো কালি দিয়ে মীর মুগ্ধ মঞ্চের নাম ঢেকে দেয়।
খবর পেয়ে ২৫শে জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চ পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।এছাড়াও গত ২৬শে জানুয়ারি উত্তরখান ময়নারটেক স্কুলের দেয়ালের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় ২৭শে জানুয়ারি সোমবার দুপুরে উত্তরখান মাজার চৌরাস্তায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আওয়ামী দুর্বৃত্ত কর্তৃক গ্রাফিতি মুছে ফেলাসহ নাশকতার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের সময় স্লোগানে তারা বলেন, “আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়-নি যুদ্ধ, দিয়েছিতো রক্ত আরো দেবো রক্ত, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে হবে নিষিদ্ধ। আওয়ামী লীগের গুন্ডারা রাজপথে থাকিস না, রাজপথে নামলে পিঠের চামড়া থাকবে না, আওয়ামী লীগের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুরিয়ে দাও। ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও। আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়-নি যুদ্ধ। ছাত্রলীগ, যুবলীগ হুশিয়ার সাবধান। রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়। আপস না সংগ্রাম! সংগ্রাম, সংগ্রাম।”
অপরদিকে উত্তরায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদেরকে অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করতে বলেন মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। এ সময় তিনি আরো বলেন, “এ সরকারের কাছে জনগণের বড় দাবি ছিল তারা জুলাই-আগস্টের গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার করবে। ফ্যাসিবাদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতাই ফ্যাসিবাদকে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দিয়েছে। অবিলম্বে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদেরকে বিচারের মুখোমুখি করুন।”
আজ দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধ মঞ্চসহ উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী দুর্বৃত্ত কর্তৃক নাশকতার প্রতিবাদে এবং জুলাই-আগস্ট গণহত্যার খুনীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এসব কথা বলেন।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, “জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা এসব অপকর্ম করছে।”
আপনার মতামত লিখুন :