

অবিরাম বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম। এবার চট্টগ্রামবাসীর জন্য আরও দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে আবহাওয়া পূর্বাভাসের বিভিন্ন মডেল। পূর্বাভাস বলছে, আজ মঙ্গলবার (২১ জুন) ভোর থেকে গতকাল রাতের মতো ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে। এতে পাহাড়ধসের ঝুঁকি বাড়ছে।
গতকাল সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সাথে বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তবে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ মঙ্গলবার (২১ জুন) ভোর ৫টায় ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নির্ভুল আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের European Centre for Medium-Range Weather Forecasts, যার সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটা ঘটলে পাহাড়ধসের শতভাগ ঝুঁকি আছে বলা যায়।
তিনি বলেন, আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল যা নির্দেশ করছে, তার সকল প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বিমানবাহিনীর চট্টগ্রামের রাডার থেকে। রাডার থেকে পাওয়া চিত্র দেখে ধারণা করা যায়, ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যেই চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা আছে। গতকাল রাতে ব্যাপক পরিমাণ বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম শহরের বেশিভাগ অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই ওই অঞ্চলে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের পরও ব্যাপক পাহাড়ধস ঘটেনি। তবে আতঙ্কের বিষয় হলো, মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিপাত হলে তা পাহাড়ধসের প্রচণ্ড ঝুঁকি তৈরি করবে। কারণ ইতোমধ্যেই পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে আছে, যা নতুন করে ভারী বৃষ্টির পানির ভার বহন করতে সক্ষম হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে খাড়াভাবে কেটে ফেলা পাহাড়গুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। মঙ্গলবার থেকে বুধবারের মধ্যে যেকোনো সময় পাহাড়ধস ঘটতে পারে।
মোস্তফা কামাল পলাশ আরও বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। কারণ ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টি এই স্থানগুলোতে হবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল।
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাহাড়ের কাছে বসবাসরত মানুষদের সতর্ক করার জন্য সকাল থেকেই মাইকিং করা প্রয়োজন। সম্ভব হলে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা মানুষদের আগামী দুদিনের জন্য সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা উচিত।’
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
আপনার মতামত লিখুন :