দুই দেশের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর ‘শান্তি’র আহ্বান জানালো ট্রাম্প


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ২৪, ২০২৫, ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ /
দুই দেশের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর ‘শান্তি’র আহ্বান জানালো ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প – ফাইল ছবি

ট্রাম্প বলেন, ‘সম্ভবত ইরান এখন এই অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতির দিকে এগোতে পারে, এবং আমি উৎসাহের সাথে ইসরাইলকেও একই কাজ করতে বলব।’’ কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পরে নিজের ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘অভিনন্দন বিশ্ব, এখন শান্তির সময়।’

ইরানের হামলার বিষয়ে তিনি লিখেছেন, “ইরানের প্রতিক্রিয়া ‘খুবই দুর্বল’ এবং ‘আমাদেরকে আগেই নোটিশ দেয়ার জন্য’ তাদেরকে ধন্যবাদ। ‘ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের প্রতিক্রিয়া খুবই দুর্বলভাবে দিয়েছে, যা আমরা আশা করেছিলাম এবং খুবই কার্যকরভাবে প্রতিহত করা হয়েছে,’ ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ওই অঞ্চলের শান্তির জন্য কাতারের আমির যা করেছেন, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরান ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার ১৩টি ‘ধ্বংস’ করা হয়েছে এবং আরেকটি অন্যদিকে চলে গেছে। ওই হামলায় কোনো আমেরিকানের ক্ষতি হয়নি এবং ‘তেমন কোনো সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতিও হয়নি’, বলেন তিনি।

এমনকি কাতারের কোনো বাসিন্দাও নিহত বা আহত হয়নি, জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তারা তাদের ‘সিস্টেম’ থেকে সবকিছু বের করে এনেছে এবং আশা করি, আর কোনো ঘৃণা থাকবে না। আমাদেরকে আগেই নোটিশ দেয়ায় আমি ইরানকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

ট্রাম্প বলেন, ‘সম্ভবত ইরান এখন এই অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতির দিকে এগোতে পারে, এবং আমি উৎসাহের সাথে ইসরাইলকেও একই কাজ করতে বলব।’’ এর আগে, সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা জানায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ অ্যাজেন্সি।

তাসনিম জানায়, ‘বিশারাত ফাতেহ’ ও ‘ইয়া আবা আবদুল্লাহ’ নামে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় একাধিক ওয়ারহেড বা ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে। হামলার বিষয়ে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ আল হুসেইন’ সাঙ্কেতিক নাম ধারণ করে বিপ্লবী গার্ড বাহিনী কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।

এক বিবৃতিতে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে ‘বাশারাত ফাতেহ’ অপারেশনে কাতারের উদেইদ ঘাঁটিকে ‘বিধ্বংসী এবং শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে লক্ষ্যবস্তু’ করে হামলা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এ অভিযান ‘সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের নির্দেশে এবং খাতাম আল আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতরের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে’। রাজধানী দোহা এবং এর উপকণ্ঠ লুসাইলে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং আকাশে প্রজেক্টাইল দেখা যাচ্ছে।

সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সফল অভিযানে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ বোমা ব্যবহার করেছিল তার সমান ছিল। শক্তিশালী ইরানি বাহিনীর হামলায় যে ঘাঁটিটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল তা কাতারের নগর স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকা থেকে অনেক দূরে ছিল।’

এদিকে, কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ইরানি হামলার খবরের পর কাতার, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

ইরানি সরকারি মিডিয়া ও টিভি চ্যানেলগুলোর বরাতে জানা গেছে, কাতারের মার্কিন ঘাঁটি আল উদেইদ এবং ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে ‘অপারেশন বাশায়ের আল-ফাতাহ’ নামে ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে এই প্রতিক্রিয়া ছিল বিপ্লবী গার্ড এবং নিয়মিত সেনাবাহিনীর একটি যৌথ অভিযান।

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।