

পাকিস্তানে সংবিধানে ২৭তম সংশোধনী বিল সিনেটে উত্থাপিত হয়েছে, যা দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিলটি দ্রুত পাস করার জন্য সরকারের তাড়াহুড়ো এবং বিরোধীদলীয় তীব্র প্রতিক্রিয়ার কারণে এটি ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও সামরিক কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হবে, যা দেশের প্রশাসনিক ভারসাম্য ও সংবিধানিক কাঠামোর উপর দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী বিলটি শনিবার (৮ নভেম্বর) সিনেটে উপস্থাপন করা হয়। আইনমন্ত্রী আজম নাজীর তারার এই বিল উপস্থাপন করেন এবং এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা ভার্চুয়ালি অনুমোদন দেয়। বিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধান (২৭তম সংশোধন) আইন, ২০২৫ নামে পরিচিত হবে। এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হলো বিচার বিভাগ এবং সামরিক নেতৃত্বের কাঠামো আধুনিকীকরণ এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলোকে কার্যকর করা। একই সঙ্গে বর্তমান যৌথ প্রধান সদস্য কমিটির চেয়ারম্যান, সিজেসিএসসি (CJCSC) অবসর নেওয়ার পর ২৭ নভেম্বর থেকে ওই পদ বিলুপ্ত হবে এবং সেনাপ্রধানকে, সিওএএস (COAS) প্রধান প্রতিরক্ষা বাহিনী সিডিএফ (CDF) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
২৭ তম সাংবিধানিক সংশোধনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
বিরোধীদলের প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র। পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার আলি জাফর বলেন, সরকারের তাড়াহুড়ো এই বিল পাস করতে জনগণের প্রতিনিধিত্বহীনতা প্রকাশ করছে। জেইউআই-এফ ( JUI-F) সিনেটর কামরান মুর্তজা বলেন, ২৬তম সংশোধনী পাস হওয়ার মাত্র ১৩ মাসের মধ্যে এটি কার্যত উল্টানো হচ্ছে। পিপিপি ( PPP) সিনেটর শেরি রহমান বলছেন, এই বিল ১৮তম সংশোধনী বা ১৯৭৩ সালের সংবিধানের ভিত্তিকে ক্ষুণ্ণ করছে না। আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি-র প্রধান আইমল ওয়ালি খান মন্তব্য করেছেন, যদি সরকার এই উদ্যোগ জনগণের জন্য নেয়, তারা সমর্থন করবে এবং বিরোধীদলকেও পার্লামেন্টারী কমিটিতে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানে ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত পদক্ষেপ যা দেশের সামরিক এবং বিচারিক কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসছে। এই সংশোধনী দেশের রাজনৈতিক ও সংবিধানিক ভারসাম্যকে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত করতে পারে এবং সেনা ও বেসামরিক ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথ্যসূত্র : দ্য ডন
আপনার মতামত লিখুন :