প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে আবারও কূটনৈতিক আলোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই ব্যতিক্রমধর্মী বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন। এ ঘটনাটি দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষ করে যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ।
এই সফরের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে আয়োজিত নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের কাছে সাংবাদিকরা ভারতের অবস্থান জানতে চান। তিনি জানান, “আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চলতি এপ্রিল মাসেই বাংলাদেশ সফরে আসছেন, এ ঘটনাও ভারতের নজরে রয়েছে। তবে এ বিষয়ে অতিরিক্ত কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি, যা থেকে ভারতের সংযত কূটনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়।
অপর এক প্রশ্নে, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ নিয়ে জানতে চাইলে জয়সওয়াল জানান, “এই বিষয়ে আমরা আগেও বহুবার কথা বলেছি। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আলোচনাতেও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, ভারত বরাবরই বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করে এসেছে।
জয়সওয়াল ইঙ্গিত দেন, বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পেছনে কিছু ‘ঘটনা’ রয়েছে, যেগুলোর প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তবে তিনি সেই ‘ঘটনাবলি’ কী, তা স্পষ্ট করে বলেননি। এই সংযত ও কৌশলী অবস্থান ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির একটি পরিচিত রূপ—যেখানে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে কৌশলগত সাবধানতা বজায় রাখা হয়। এই মুহূর্তে ভারত, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বজায় রাখতে আগ্রহী, যা ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন :