রাজধানীর এক মিলনায়তনে বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের কর্মশালায় অতিথিরা-সংগৃহীত
দেশের সব মসজিদকে অভিন্ন নীতিমালা আওতায় পরিচালনার এ আহবান জানান দেশের শীর্ষ আলেমরা। গতকাল বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের উদ্যোগে রাজধানীর কাঁটাবন সেন্ট্রাল পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘মসজিদ ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রণয়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় আলেমরা এ আহ্বান জানান।
কর্মশালায় মসজিদ মিশনের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ২২ পৃষ্ঠার মসজিদ ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রস্তাব পেশ করেন মসজিদ মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি ও তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানি। কর্মশালায় উপস্থাপিত নীতিমালা প্রস্তাবের ওপর উপস্থিত আলেম উলামা সুনির্দিষ্ট ও সুচিন্তিত পরামর্শ প্রদান করেন। মসজিদ ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রণয়নের মৌলিক দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- মসজিদ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কমিটি বা কর্তৃপক্ষের কোনো অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হবে না, সব মসজিদে একটি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকবেন যারা নিয়মিত মুসল্লি ও ইসলামী আদর্শে বা মূল্যবোধে বিশ্বাসী। সেক্ষেত্রে অনিয়মিত মুসল্লি এবং চিহ্নিত অপরাধীকে মসজিদ পরিচালনা কমিটিতে না রাখা, মসজিদের ইমাম বা খতিবকে পরিচালনা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখা, মসজিদ কমিটি, ইমাম খতিব ও মুসল্লিদের মধ্যে একটি গভীর সেতুবন্ধন তৈরি করা, ইমাম খতিব মোয়াজ্জিন খাদেম সব কর্মচারীর নিয়োগ বিয়োগ একটি নীতিমালা থাকতে হবে, ইমাম খতিবদের অবমাননা কর পরিস্থিতির শিকার যেন না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে আন্তরিক থাকতে হবে, মসজিদের ইমাম খতিব ও মুয়াজ্জিনসহ সবার জীবনযাপনের জন্য একটি মানসম্মত সম্মানী নির্ধারণ করা, মসজিদের উদ্যোগে নিয়মিত মাসিক ও সাপ্তাহিক ইসলামিক জলসার আয়োজন করা, ইমাম-মুয়াজ্জিনকে দিয়ে সুবহে মক্তব ও কুরআন শিক্ষার কার্যকরী ব্যবস্থা রাখা এবং সন্ধ্যায় মসজিদকেন্দ্রিক বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা ইত্যাদি।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তৃতায় দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জায়গা। কাজেই আদর্শ দেশ ও জাতি গঠনে মসজিদের ভূমিকা অপরিসীম। তাছাড়া মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্টরা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাবান। তিনি আরো বলেন, আজকে আপনারা যে মতামত দিয়েছেন আপনাদের এই মতামত, অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একঝাঁক মেধাবীদের ইমাম ও খতিবদের পরামর্শ নিয়ে আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত মসজিদগুলোর জন্য একটি অভিজ্ঞ নীতিমালা প্রণয়ন করব যা ইতিহাস হয়ে থাকবে। ইনশা আল্লাহ।
কর্মশালায় দেশবরেণ্য উলামাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শায়েখ আ ন ম রশীদ আহমাদ মাদানি, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, সাতারকুল নুর মুহাম্মাদ ফাজিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, মিসবাহুল উলুম কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মহিউদ্দিন আহমাদ, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা টংগী শাখার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হাফেজ মাওলানা লুতফুর রহমান, মাওলানা ফখরুদ্দিন আহমাদ, মাওলানা নাসিরুদ্দিন হেলালী, মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, ড. মাওলানা নুরুল্লাহ মাদানি, নিবরাস মাদরাসার প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ মুতাসিম বিল্লাহ মাক্কী, ডক্টর অধ্যক্ষ মাওলানা মহিউদ্দিন আহমেদ, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আজহারী, ড. কামরুল ইসলাম শাহীন, মুফতি ইউসুফ মাহমুদী, মাওলানা জহিরুল ইসলাম জাবেরী, মুহাদ্দিস আব্দুল গফফার মাক্কীসহ অন্যান্য উলামায়ে কেরাম।
আপনার মতামত লিখুন :