যমুনা রেল সেতুতে সফলভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন, সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ১৮ মার্চ 


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ৯:২৪ পূর্বাহ্ণ /
যমুনা রেল সেতুতে সফলভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন, সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ১৮ মার্চ 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে প্রথমবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রেলপথের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত নতুন রেলপথ চালু হওয়ার ফলে যমুনার এপার-ওপারে ক্রসিংয়ে অপেক্ষার পালা থেকে মুক্তি পেল যাত্রীরা।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সিল্কসিটি ট্রেন নবনির্মিত যমুনা রেলসেতু অতিক্রম করে। মাত্র ৬ মিনিটে ট্রেনটি সেতু পার হয়। এ সময় ট্রেনটির ঘণ্টায় গতি ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে টাঙ্গাইলের ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশন পূর্ব প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জ সয়দাবাদ রেলস্টেশনের উদ্দেশে ট্রেনের একটি ইঞ্জিন পরীক্ষামূলকভাবে যমুনা রেলসেতুতে চালানো হয়। যার ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল ৫০ কিলোমিটার। অপর দিকে সকাল ১০টায় বনলতা এক্সপ্রেস শেষবারের মতো পুরোনো যমুনা সেতু ব্যবহার করে যাত্রা করে, যা সেই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের সমাপ্তি টেনে দেয়।

যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, যমুনা নদীর ওপর নবনির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতুতে দুটি (ডাবল) রেললাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। আগামী ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ওই দিন থেকে দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

মাসউদুর রহমান আরও জানান, উদ্বোধনের দিন যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই অনুষ্ঠানে থাকবেন। ওই দিন থেকে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে এবং যমুনা সেতু দিয়ে আর কোনো ট্রেন চলাচল করবে না। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে জাপানি সংস্থা জাইকা। নতুন সেতুর ফলে প্রতিটি ট্রেন পারাপারে সময় বাঁচবে ৩০-৩৫ মিনিট।

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, যমুনা নদীর ওপর নির্মিত অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির তৈরি দেশের বৃহৎ রেলওয়ে সেতু দিয়ে সফলভাবে যাত্রীবাহী পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে। গতকাল সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি ট্রেনটি সিরাজগঞ্জ প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল প্রান্তে অতিক্রমের মাধ্যমে যাত্রীবাসী ট্রেনের সফল পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়।

পরে কিছু সময়ের ব্যবধানে টাঙ্গাইল প্রান্ত থেকে ভুরিমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিরাজগঞ্জ প্রান্ত পৌঁছায়। এতে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ দুই লাইনেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সফল পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে উচ্ছ্বসিত এই প্রকল্পের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও যাত্রীরা।

গতকাল সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুর সিরাজগঞ্জ প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল প্রান্ত অতিক্রম করে।

এসময় ট্রেনে থাকা যাত্রীরা হাত নেড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পাশাপাশি রেলসেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরাও জানায় তাদের উচ্ছ্বসিত অনুভূতি।
প্রায় ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪.৮ কিমি রেল সেতুটি ২০২০ এর নভেম্বরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। যা চলতি বছরের মার্চে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।