যশোর রিজিয়ন ও ৪৯ ব্যাটালিয়নের কঠোর চোরাচালান ও মাদক বিরোধী অভিযানে বিদায়ী বছরে ৫২৯ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ


Al Amin প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২১, ২০২৫, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ /
যশোর রিজিয়ন ও ৪৯ ব্যাটালিয়নের কঠোর চোরাচালান ও মাদক বিরোধী অভিযানে বিদায়ী বছরে ৫২৯ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিজিবি’র দক্ষিণ-পশ্চিম-রিজিয়ন সদর দপ্তর (যশোর)। পিলখানায় ২০ জানুয়ারি ২০১৩  সালে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পথচলা শুরু করেন।
যশোর ঝুমঝুমপুরে সদর দপ্তর  অবস্থিত। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মোর্তজা খান, এএফসিইসি, পিএসসি ছিলেন প্রথম রিজিয়ন কমান্ডার।

যশোর রিজিয়নের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের অবস্থিত, পূর্ব ও উত্তরে  রয়েছে পদ্মা নদী। এই অঞ্চলটি ছয়টি  সীমান্ত জেলা নিয়ে অবস্থিত সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া।
এছাড়াও  প্রশাসনিক জেলা হিসাবে  খুলনা, বাগেরহাট, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, রাজবাড়ী জেলা এবং সমগ্র বরিশাল বিভাগ এই অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার আওতাধীন (মোট জেলা -১৮)।
এই অঞ্চলে দুটি সেক্টর রয়েছে । সীমান্ত অঞ্চল সাতক্ষীরা, যশোর এবং ঝিনাইদহ জেলার অংশ খুলনা সেক্টরে এবং কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং ঝিনাইদহ জেলা রয়েছে কুষ্টিয়া সেক্টরের অধীনে । এই অঞ্চলে সীমান্তের বেল্টের দৈর্ঘ্য ৬৪৪ কিলোমিটার যার মধ্যে আছে ২৫৯ কিলোমিটার নদী সীমানা ।

প্রতিষ্ঠা লাভের পর হতে বিজিবি’র সকল স্তরের সদস্যগণ সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাচ্ছে। আভিযানিক কর্মকান্ড, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদক পাচার বিরোধী অভিযানে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত রিজিয়ন সদর দপ্তর, যশোর এবং যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) উল্লেখযোগ্য সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন এবং ৪৯ বিজিবি এর সকল কর্মকর্তাগণ ও অন্যান্য সদস্যরা তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, দক্ষতা এবং কর্তব্য নিষ্ঠার মাধ্যমে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিদায়ী ২০২৪ সালে এক বছরে দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন ও ৪৯ বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়ন সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ৫২৯ কোটি ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৪০৮ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়নের অধীনে সকল ইউনিট সমূহ কর্তৃক বিগত ০১ বছরে ৭৯.২২৬৩৪৭ কেজি স্বর্ণ, ১৭৪.৫০৩ কেজি রৌপ্য, ১০৩.৬৪৩ কেজি কোকেন, ২৭.২৬৩ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৫৬ বোতল এলএসডি, ৬২.৬২৮৭৫ কেজি হেরোইন, ২.১৫ কেজি সাপের বিষ, ৪২ টি অস্ত্র এবং ৪.৭৫ কেজি কষ্টি পাথরসহ অন্যান্য বিভিন্ন চোরাচালানী মালামাল আটক করতে সক্ষম হয় যার সর্বমোট সিজার মূল্য ৫২৯,০২,৫২,৪০৮/- (পাঁচশত ঊনত্রিশ কোটি দুই লক্ষ বায়ান্ন হাজার চারশত আট) টাকা।

যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক, লেঃ কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী, এসপিসি, পিএসসি জানান, বিজিবি’র আভিযানিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ও চোরাচালান মালামালসহ পাচার চক্র আটকের ক্ষেত্রে সীমান্তে বিজিবির গোয়েন্দা ও টহল তৎপরতা জোরদারের মাধ্যমে সকল চোরাচালান ও অপতৎপরতা রোধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি।

ভারতীয় দ্রব্য সামগ্রী চোরাচালানের কারণে দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবার পাশাপাশি দেশ উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিজিবি সূত্র আরো জানান, আটককৃত মালামালের মধ্যে সমস্ত প্রকার মাদক ধ্বংস  করার জন্য ব্যাটালিয়নে সদরে জমা রেখে অন্যান্য মালামাল কাস্টমের আটক শাখায় জমা করা হয়েছে।

সীমান্তের বিভিন্ন শ্রেণী পেশা ও সচেতন নাগরিক  সমাজের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে দেশের তরুণ ও যুব সমাজকে মাদকের নির্মম ছোবল হতে রক্ষা করার মহতী উদ্যোগ এবং বিজিবি’র দেশপ্রেমিক ও জনস্বার্থে পরিচালিত অভিযানকে স্থানীয় জনগণ সাধুবাদ জানায়। এছাড়াও ভবিষ্যতে বিজিবি’র এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করেন।