ইউক্রেনে যুদ্ধ। পরিবারগুলো বিপর্যস্ত। পরিবারের কে কোথায় আছেন- তা জানেন না বেশির ভাগ পরিবারের জীবিত সদস্যরা। অনেকটা একই অবস্থা প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি পরিবারেও। ফার্স্টলেডি ওলেনা জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সে কথা। বলেছেন, যুদ্ধের কারণে স্বামী ভোলোদিমিরের সঙ্গে তার সম্পর্ক আপাতত থমকে আছে। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখাসাক্ষাৎ নেই। এ অবস্থা সন্তানদের জন্য স্বাভাবিক নয়। সন্তানরা শুধুই ফোনে তার পিতার সঙ্গে কথা বলতে পারে।
তাই তাদের সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য অপেক্ষা করছেন ওলেনা। ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায়।
এ জন্য অনেক মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু দেশটির ফার্স্ট দম্পতি দেশ ছাড়েন নি। তারা ব্যতিক্রমধর্মী এই যুদ্ধের মধ্যে অবস্থান করছেন রাজধানী কিয়েভে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের মুখে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তারা পাচ্ছেন সারাবিশ্বের প্রশংসা। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ হচ্ছে স্বল্প সময়ের জন্য। নিরাপত্তার কারণে সামান্য সময়ের জন্য তাদেরকে সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়।
এ সম্পর্কে ওলেনা জেলেনস্কি বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে এটা কোনো স্বাভাবিক সম্পর্ক নয়। বাচ্চারা তাদের পিতাকে দেখতে পাচ্ছে না অনেক দিন। তাই ইউক্রেনের সব মানুষের যে অবস্থা, আমাদেরও সেই একই অবস্থা। ভোলোদিমিরের সঙ্গে আমার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থমকে গেছে। সিএনএনের খ্রিশ্চিয়ান আমানপোরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওলেনা এ কথা বলেছেন অবলীলায়।
তিনি বলেছেন, আবার পুনর্মিলন হওয়ার জন্য, আবার একত্রিত হওয়ার জন্য, আবার একসঙ্গে সন্ধ্যা কাটানোর জন্য, বাচ্চাদের নিয়ে আনন্দে কাটানোর জন্য অপেক্ষা করছি।
ইউক্রেনের এই ফার্স্ট দম্পতি যুদ্ধের প্রথম দুই মাস একে অন্যের সাক্ষাৎ একেবারেই পাননি। এ সময়ে রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত ছিল ইউক্রেনের বাহিনী। রাজধানী কিয়েভে নিজের অফিসে অবস্থান করছেন প্রেসিডেন্ট। তাকে ঘিরে আছেন ডেপুটি ও নিরাপত্তা উপদেষ্টারা। অন্যদিকে তাদের ১৭ বছর বয়সী সন্তান ওলেকসান্দ্রা এবং ৯ বছর বয়সী সন্তান কিরিলো’কে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে নিরাপত্তার কারণে।
পুতিনের সেনারা যখন কিয়েভ থেকে একবার সরে যায় এবং পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধে মনোনিবেশ করে, তখন একবার খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য একত্রিত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এবং ফার্স্টলেডি ওলেনা জেলেনস্কি।
এর আগের এক সাক্ষাৎকারে ওলেনা বলেছিলেন, আগ্রাসন শুরুর প্রথম দিকে আমরা দু’জন একে অন্যকে বিদায় জানিয়েছিলাম। পরের দুই মাসে আমরা শুধু ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি গর্বিত এ জন্য যে, বিশ্ব আমার স্বামীর সত্যিকার পরিচয় উদঘাটন করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :