পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিতে ফ্রান্সের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে রাফাল যুদ্ধবিমানের বহর কিনেছিল ভারত। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। চলতি বছরের মে মাসে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় পাকিস্তান চীনের জে ১০সি ভিগোরাস ড্রাগন এবং জেএফ-১৭ থান্ডার ব্যবহার করে ফান্সের তৈরি বেশ কয়েকটি রাফাল গুলি করে ভূপাতিত করেছিল। এরপরেই বিশ্বজুড়ে কমছে রাফালের চাহিদা।
পাকিস্তান তিনটি রাফাল সহ ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছিল। সেবারই প্রথম সক্রিয় যুদ্ধে জে ১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এ ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। একদিকে চীনের বিমান যেমন প্রশংসিত হতে থাকে, অন্যদিকে তেমনি চাহিদা হারায় ফ্রান্সের রাফাল। এ পরিস্থিতিতে এবার মুখ রক্ষা করতে ফরাসি গোয়েন্দারা দাবি করেছে যে, চীন তার কূটনৈতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফ্রান্সের যুদ্ধবিমানগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার ফরাসি গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, রাফালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা নিজেদের দূতাবাসগুলিকে ব্যবহার করছে। যেসব দেশ ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বা আলোচনায় বসেছে, সেসব দেশকে রাফাল না কিনে চীনা যুদ্ধবিমান কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে ভাঙা রাফাল যুদ্ধবিমানের ভুয়া ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া রাফালের পরিবর্তে চীনা বিমান কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ভারত স্বীকার করেছে যে, যুদ্ধে তারা বিমান হারিয়েছে কিন্তু কোনটি বা কতটি তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফরাসি বিমান বাহিনীর জেনারেল জেরোম বেলাঙ্গার বলেন, ভারত যুদ্ধে মাত্র তিনটি বিমান হারিয়েছে বলে তিনি প্রমাণ পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি রাফাল, একটি রাশিয়ান-নির্মিত সুখোই ও ফ্রান্সের পূর্ববর্তী প্রজন্মের একটি মিরাজ ২০০০। এটি ছিল রাফালের প্রথম পরিচিত যুদ্ধ ক্ষতি, যা ফ্রান্স আটটি দেশের কাছে বিক্রি করেছে। অবশ্যই, রাফাল কেনা দেশগুলো এখন আফশোস করছে,’ তিনি আরও যোগ করেন।
ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে যে, রাফাল ‘বিস্তৃত বিভ্রান্তিকর প্রচারণা’র শিকার হয়েছে যার উদ্দেশ্য ছিল ‘বিকল্প সরঞ্জামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করা’। বিশেষ করে চীনা নকশার। ‘রাফালকে এলোমেলোভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। এটি একটি অত্যন্ত সক্ষম যুদ্ধবিমান,’ মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, ‘এর মাধ্যমে ফ্রান্স এবং তার প্রতিরক্ষা শিল্প ও প্রযুক্তিগত ভিত্তির বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।’
তবে চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ফ্রান্সের এই দাবিকে ‘ভিত্তিহীন গুজব এবং অপবাদ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ‘চীন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে এবং ধারাবাহিকভাবে সামরিক রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি বিচক্ষণ এবং দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে,’ এতে বলা হয়েছে। সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ।
আপনার মতামত লিখুন :