লেজার ক্ষেপণাস্ত্রে বড় সাফল্য অর্জন ইরানের


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ণ /
লেজার ক্ষেপণাস্ত্রে বড় সাফল্য অর্জন ইরানের

প্রতীকী ছবি

লেজার প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অগ্রগতির মাধ্যমে ইরান এশিয়া এমনকি গোটা বিশ্বেই বিশেষ অবস্থানে পৌঁছে গেছে। লেজার প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক ও প্রতিরক্ষা গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শিল্প ক্ষেত্র থেকে শুরু করে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পর্যন্ত সর্বত্রই এর বিস্তৃত প্রয়োগ রয়েছে।

পার্সটুডের তথ্য বলছে, ইরান এই ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে এবং লেজার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। ইরান ১৯৭০ সাল থেকে লেজার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বড় কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানে লেজার গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে নানা ধরণের লেজার তৈরি করেছে। গ্যাস লেজার, সেমিকন্ডাক্টর লেজার এবং বিভিন্ন উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন লেজারসহ বিভিন্ন ধরণের লেজার উৎপাদনে দক্ষতা অর্জন করেছে। ২০১৭ সালের মিউনিখ প্রদর্শনীর মতো আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতেও অংশগ্রহণ করেছে ইরান। মৌলিক প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের অংশ হিসেবে এ ক্ষেত্রেও ইরান অগ্রগামী হয়েছে।

অর্জনসমূহ
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ইরান সফলভাবে ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন লেজারের পরীক্ষা চালায়, যা ইরানকে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। এছাড়া, ইরান ২০২২ সালে বিনা লেজার নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ‘বিনা’ এর পরীক্ষা চালিয়েছে, যা সামরিক অস্ত্রে লেজার প্রযুক্তি সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে দেশটির ক্ষমতার নিদর্শন হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে ইরানের ৫ম লেজার, ফোটোনিক্স এবং কোয়ান্টাম প্রদর্শনীতে লেজার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তিনটি নতুন সাফল্য তুলে ধরেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বৃহৎ আকারের সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে ইরান “সুরুজ” লেজার-ভিত্তিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরীক্ষার চালায়, যা আকাশ পথে শত্রুদের হুমকি থেকে সংবেদনশীল অবকাঠামোকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী অবস্থান
অন্যায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান লেজার প্রযুক্তিতে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর (যেমন চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়া) মতো গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ইরান প্রতিরক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার তৈরি করেছে।

আঞ্চলিক অবস্থান
প্রতিরক্ষা এবং গবেষণার জন্য উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার তৈরিতে ইরানের দক্ষতা ও সক্ষমতা ইরানকে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। “সুরুজ” এবং “সাইলেন্ট হান্টার” এর মতো লেজার-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে সাফল্য ইরানকে এশিয়ার অগ্রণী দেশ হিসেবে সবার কাছে তুলে ধরেছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ইরান লেজার প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। চিকিৎসা, যোগাযোগ এবং জ্বালানিসহ বিভিন্ন অঙ্গনে এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে ব্যাপক গবেষণা চলছে। ইরানে মানুষের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ সুরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ কমাতে এবং কাজের মান উন্নত করতে লেজার ব্যবহার করা হয়। এই খাতে ইরানের দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। এ কারণে ভবিষ্যতে ইরান আরও অনেক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : পার্সটুডে।