

সংগৃহীত ছবি
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ’ জারি করেছে সরকার। রবিবার রাতে এই অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার পথ খুললো।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু সংবিধানের ১০৯ এবং ১১৬ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে অধস্তন আদালতের তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান সংক্রান্ত বিষয়াদি যথাযথরূপে পালনের জন্য এবং বিচার বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা পালনের জন্য একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক এবং এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তসমূহ সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; যেহেতু আপিল বিভাগের ৭৯/১৯৯৯ নম্বর সিভিল আপিলের রায় বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথককরণ বাস্তবায়নকল্পে বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে; এবং যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে; সেহেতু সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি নিম্নরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।
অধ্যাদেশর বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এই অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার পথ খুলে গেল। এখন সচিবালয়ে অগ্রানোগ্রাম তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, এই অধ্যাদেশের অধিকাংশ ধারা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি কিছু ধারা কার্যকরে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করতে হবে।
গতকাল রাতে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের গেজেট জারির তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের পদক্ষেপে গত ২৭ অক্টোবর বিচার বিভাগের জন্য একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় গঠনের জন্য একটি খসড়া অধ্যাদেশ প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয় সুপ্রিম কোর্ট থেকে। এই প্রস্তাবের সঙ্গে সচিবালয়ের সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যপ্রণালী বিধি (রুলস অব বিজনেস) ও কার্যবণ্টনের প্রস্তাবও পাঠানো হয়। পরে গত ২০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির মধ্যদিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক সহযোগিতায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিলো।
আপনার মতামত লিখুন :