বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুতে থানায় মামলা খুলনায়


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ২৪, ২০২২, ৭:২২ পূর্বাহ্ণ /
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুতে থানায় মামলা খুলনায়

খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির ছাত্র প্রমিজ নাগের মৃত্যুতে মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় আসামী করা হয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরাইয়া ইসলাম মীমকে। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সোনাডাঙ্গা থানায় প্রমিজের চাচাতো ভাই প্রীতিশ কুমার নাগ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ হাসান মৃধা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রমিজ নাগ ও সুরাইয়া ইসলাম একই বিশ্ববিদ্যলায়ের লেখাপড়ার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সুরাইয়া ইসলাম প্রায় প্রমিজ নাগের বাসায় আসা যাওয়া করতো। এক পর্যায়ে বিবাহ করার জন্য মেয়েটি প্রমিজ নাগকে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে। তবে দুইজনে ভিন্ন ধর্মী হওয়ায় প্রমিজ নাগ তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। গত ২০ জুন সুরাইয়া ইসলাম পুনরায় প্রমিজ নাগের বাসায় এসে কথাবর্তার এক পর্যায়ে, প্রমিজ নাগের মাথায় ল্যাপটব দিয়ে আঘাত করে এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকী ধামকী দিয়ে চলে যায়।

এরপর ২২ জুন আবারও মেয়েটি প্রমিজ নাগ বাসায় এসে দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে পাশে থাকা মেসের ছেলেদের নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। তখন তারা প্রমিজকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে মেয়েটি পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রমিজকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সুরাইয়া ইসলামের নির্যাতন ও প্ররোচনা সহ্য করতে না পেরে প্রমিজ নাগ আত্মহত্যা করেছে।

প্রমিজ খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার সাচিয়া গ্রামে।

এছাড়া সুরাইয়া ইসলাম একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। সে নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বাবুপুর গ্রামের আবুল কালাম আাজাদের মেয়ে।

প্রমিজ খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গার গোবরচাকা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানেই বুধবার সন্ধ্যায় তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।

কেএমপি সোনাডাঙ্গার সহকারী পুলিশ কমিশনার আতিক বলেন, ‘প্রমিজের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও শরীরে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ঘরে বেশ কিছু স্থানে রক্তের দাগ ও সিসিটিভির ফুটেজে মরদেহ উদ্ধারের আগে ওই ঘর থেকে তার এক বান্ধবীকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

‘এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে তার বাবা-মাকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে যে কেউ একজন তার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করছিলেন। তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা লেখা আছে। গোটা বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করে আমরা শুধুমাত্র আত্মহত্যা হিসেবে নিতে পারছি না।’

কেএমপি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে যে মেয়েটিকে প্রমিজের ঘর থেকে বের হতে দেখা গেছে, তিনিও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। প্রমিজের সহপাঠীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এখন সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র আজবার রাজ বলেন, ‘ওই তরুণীর সঙ্গে প্রমিজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল, এটা আমাদের বিভাগের সবাই জানত। কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে কথা-কাটাকাটির পর তিনি প্রমিজকে মারধর করেছিলেন।’

একই কথা জানিয়েছেন প্রমিজের চাচাতো ভাই দীপংকর নাগও। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ওই তরুণী প্রমিজকে কিছু উপহার দিয়েছিলেন। সেগুলোর মূল্য এখন ফেরত চাচ্ছিলেন। প্রমিজ বাড়িতে এসব কথা শেয়ার করে টাকাও চেয়েছিলেন।’